সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় বিদ্বেষবিষয়ক একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে (ইউএনএইচআরসি)। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশ বিরোধিতা করলেও প্রস্তাবটি পাস হয়।
বুধবার পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে র্ধ্মীয় বিদ্বেষ প্রশ্নে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার প্রধানের প্রতি আহ্বান জানানো হয় এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের অনুরোধ করা হয়। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষ থেকে পাকিস্তান প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।
পাকিস্তান, ইরান ও ওআইসিভুক্ত দেশগুলো ঈদুল আজহার দিন সুইডেনে এক ইরাকি অভিবাসীর স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে পবিত্র কোরআন পোড়ানোতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ওই ঘটনার প্রেক্ষাপটে জাতিসঙ্ঘ শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থায় বিতর্ক আয়োজনের প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি মঙ্গলবার ভিডিওর মাধ্যমে জেনেভাভিত্তিক কাউন্সিলের বলেন যে “আমরা স্পষ্টভাবে যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো : ধর্মীয় বিদ্বেষের প্রতি উস্কানি, বৈষম্য এবং সহিসংতা সৃষ্টির জন্য প্ররোচনার চেষ্টা।’
তিনি বলেন, এসব কাজ হচ্ছে ‘সরকারের অনুমোদনে এবং দায়মুক্তির অনুভূতি নিয়ে।’
বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির মন্তব্যের প্রতিধ্বনি করেন ইরান, সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার মন্ত্রীরা।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার থামান। নীরবতা মানে দুষ্কর্মে সহযোগিতা করা।’
সুইডিশ সরকার কোরআন পোড়ানোকে ‘ইসলামফোবিক’ হিসেবে উল্লেখ করলেও জানায় যে তার দেশে ‘সমবেশ করা, মত প্রকাশ করা ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের অধিকার সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত।’
মঙ্গলবার ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেরোমি বোনাফন্ট বলেন, মানবাধিকার ‘মানুষকে রক্ষা করে- কোনো ধর্ম, মতবাদ, বিশ্বাস বা প্রতীককে নয়।… জাতিসঙ্ঘ বা কোনো রাষ্ট্র কোনটি পবিত্র তা নির্ধারণ করতে পারে না।’
প্রস্তাবটির পক্ষে ২৮টি দেশ বিপক্ষে ১২টি দেশ ভোট দেয়। ভোট দানে বিরত ছিল ৭টি দেশ।
হ্যাঁ ভোট দিয়েছে যেসব দেশ
আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ক্যামেরুন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ভারত, আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালাবি, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম।
না ভোট দিয়েছে যেসব দেশ
বেলজিয়াম, কোস্টারিকা, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টেনেগ্রো, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র।
ভোট দানে বিরত ছিল যেসব দেশ
বেনিন, চিলি, জর্জিয়া, হন্ডুরাস, মেক্সিকো, নেপাল, প্যারাগুয়ে।
সূত্র : আল জাজিরা, রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন :