বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলো কতটা জনবিচ্ছিন্ন?


কওমি ভিশন প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২১, ২০২৩, ৪:৩১ অপরাহ্ন
বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলো কতটা জনবিচ্ছিন্ন?
ওবাইদুল্লাহ ওবাইদ


আমাদের দেশে নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত ইসলামি দলের সংখ্যা অগণিত। আমরা কখনও নাম শুনিনি এমন অনেক দলের নাম আপনি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পাবেন। এত এত ইসলামি দল প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী? দলেদলে দলবদ্ধ হওয়ার নামকরে আমরা যেন দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়ছি।
এ দেশ মুসলিম দেশ, মুসলমানদের দেশ। গংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম এখানে বসবাস করে। সকলেই মোটামুটি ধর্মপ্রাণ। কিন্তু তা সত্ত্বেও দুঃখজনকভাবে কোনো একটি ইসলামি দলের সাথে জনসাধারণের ব্যাপক সম্পৃক্ততা নেই। দলগুলো যে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দীনি আইন বাস্তবায়ন করতে চায়, সে দেশের জনগণ তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন। এরচে বড় ব্যর্থতা আর কী হতে পারে? এর সমাধানে কি তারা কাজ করছে? আমার জানা নেই।
বাস্তব কথা হচ্ছে, বেশির ভাগ ইসলামি দলগুলো নিজেদের মাদ্রাসার ছাত্র কেন্দ্রিক। কোনো সভা-সমাবেশ হলে নিজেদের মাদরাসার ছাত্ররাই সেখানে যায়। এক দল কর্মসূচি ডাক দিলে অন্য মাদ্রাসার ছাত্রদের সেখানে আসতে তেমন একটা দেখা যায় না, কারণ তাদের বড় হুজুরের দল আরেকটা। যে মাদরাসার বড় হুজুর যে দল করেন সেই মাদরাসাটা ওই দলের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠে। ওখানে আবার অন্য ইসলামিক দলের পাত্তা থাকে না।
দুই/তিনটা দল কওমি অঙ্গনে মোটামুটি জনপ্রিয়তা পেলেও সর্বসাধারণের সাথে ব্যাপক সম্পর্ক একটা দলেরও নেই। যে কোনো ইস্যুতে ব্যানার হাতে কিংবা মিছিলে সব মাদরাসার ছাত্র দেখা যায়। সাধারণ মানুষ থাকে না। এত এত দল করে কাজটা কী? অথচ দরকার ছিল, একটা মুসলিম প্রধান দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হবে আলেমদের।
প্রত্যেকটা দলের মিছিলে স্লোগান হয়, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও’। কিন্তু আমরা দুই মাদ্রাসার দুই দল এক হতে পারি না। আরব বিশ্ব কিংবা মুসলিম এক হয়ে মুসলিমদের জন্য কেন কাজ করে না এটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা থাকলেও আমার অপর ভাইয়ের সাথে আমার দূরত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে। দলে দলে আমরা প্রতিনিয়ত বিভক্ত হয়ে পড়ছি। দুঃখজনকভাবে আমাদের চিন্তাগত বিভক্তিও বেড়েছে চরম মাত্রায়, যা কখনই কাম্য নয়।
হেফাজতে ইসলাম এ জায়গায় সফল হয়েছিল সাময়িক। সেই সফলতা ধরে রাখা যায়নি বেশিদিন। শুকরানা মাহফিল মানুষের আস্থা ও ভালবাসায় কাফন পরিয়ে দাফন করে দিয়েছে। তবে আমরা আশাবাদী ইসলামের প্রয়োজনে এদেশের মানুষ আবারও জেগে উঠবে, অজানা কোনো ব্যক্তি কিংবা শক্তির নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ।
সম্পাদক : কওমি ভিশন