হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদিস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জনের প্রধান উপায় হল আত্মশুদ্ধি। আত্মশুদ্ধি হল, অন্তর সংশোধন, পাপমুক্ত ও কলুষমুক্ত করা। আল্লাহ তায়ালার স্মরণ, আনুগত্য ও ইবাদত ব্যতীত অন্য সমস্ত অন্যায় কাজ থেকে অন্তর পবিত্র রাখাকে আত্মশুদ্ধি বলা হয়। মানুষের আত্মিক প্রশান্তি, উন্নতি ও সাধনের জন্য আত্মশুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আত্মশুদ্ধি অর্জন মানব জীবনের অপরিহার্য একটি বিষয়।
ইসলাহী মাহফিলে আগত তৌহিদি জনতার ঢল
গতকাল ১০ ই অক্টোবর শনিবার হযরত মাওলানা শাহ তৈয়্যব রহ. এর স্মরণে জামিয়া আরাবিয়া জিরি মাদরাসার ত্রি-মাসিক ইসলাহি মাহফিলে প্রথান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। পবিত্র কুরআনের ২৬ নং পারার সূরা শুয়ারা’র,৮৮-৮৯ নং আয়াত তেলাওয়াত করে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা কলবকে (আত্মাকে) নির্মল করে সৃষ্টি করেছেন। আর সেই কলবকে সর্বরকম মলিনতা থেকে হেফাজত রাখতে আদেশ করছেন।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি কোনো কাজে আসবে না, সেদিন উপকৃত হবে কেবলমাত্র সে, যে আল্লাহর নিকট আসবে বিশুদ্ধ কলব নিয়ে।
আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, শরীরের বাহ্যিক অসুস্থতা, যেমন জ্বর, সর্দি সহ নানা ধরনের ব্যাধি হয়। তেমনি আত্মারও কিছু ব্যাধি আছে। যেমন- কিবির তথা অহংকার, হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদি। এসব ব্যধি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো তাজকিয়ায়ে নফস তথা আত্মশুদ্ধি অর্জন করা। আত্মশুদ্ধির অপর নামই হচ্ছে তরিকত। হেফাজত মহাসচিব বলেন,বর্তমান সময়ে অনেকে তরিকতের নামে ভণ্ডামি করে। উলামায়ে দেওবন্দ এবং উলামায়ে হাটহাজারী শরীয়ত-তরিকতের গুরু খেদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছেন। তাঁদের একহাতে আছে শরীয়তের পাত্র অপর হাতে আছে তরীকতের ঝাণ্ডা। তারা উভয় হাতে এসবের ব্যবহার করতে পারে। এক হাতে শরীয়তের পাত্র আঁকড়ে ধরে আছে, অপর হাতে তরীকতের ঝাণ্ডা উড়াচ্ছে। অন্যদিকে যারা তরিকতের নামে ভণ্ডামি করে তারা তরীকতের ঝাণ্ডার আঘাতে শরীয়তের পাত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। শরীয়ত ছাড়া যেহেতু তরীকত হয় না,তাই তাদের কাছে শরীয়ত তো নেই-ই, তরীকতও নেই। তারা গোমরাহ পথভ্রষ্ট।
জিরির সাবেক মোহতামীম হযরত তৈয়্যব রহ.এর কথা স্মরণ করে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মাওলানা শাহ মুহাম্মদ তৈয়্যব রহ.বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা আলেম ও বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আত্মশুদ্ধির লাইনে শাহ আবরারুল হক (রহ.) -এর খেলাফত প্রাপ্ত একজন হক্কানী পীর ছিলেন। ছাত্রদের আমাল আখলাকের প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্ববান। আমালের ব্যপারে কারো সামান্য গাফলতি দেখলে তিনি সাথে সাথে তা সংশোধনী দিতেন। সুন্নতের নববীর উপর তিনি ছিলেন অটল-অবিচল।
জামিয়া জিরির শায়খুল হাদীস মাওলানা আবু মূসার সভাপতিত্বে মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে প্রধান মেহমান হিসেবে বয়ান করেন, যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মোহতামীম মাওলানা মাহমুদুল হাসান,পটিয়া মাদরাসার মুফতী শামসুদ্দিন জিয়া,জিরি মাদরাসার মুহাদ্দিস ডক্টর আ.ফ.ম খালেদ হোসেন,সাতকানিয়া লোহাগাড়ার সাংসদ আবু রেজা নদভী এমপি,জিরির মোহতামীম মাওলানা খোবাইব,জিরির সিনিয়র উস্তাদ মাওলানা সোয়াইব,মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী কুয়াকাটা প্রমূখ।