ইসলামি শাস্ত্রগুলোর শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে কওমি মাদ্রাসাগুলোর মান দেশের প্রথমসারির যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে ৷ দ্বীনী বিষয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইসলামি অনুষদ থেকে এম.এ বা পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জনকারীদের সাথে কওমি মাদরাসা থেকে সমাপনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে তুলনাই হয় না ৷ তা সত্তেও দেশের সরকারি অঙ্গনসমূহে কওমি সনদের কোনো মূল্যায়নই ছিল না ৷ যার ফলে দেশের যেসব সরকারি পদে উলামায়ে কেরামের বিচরণের প্রয়োজন ছিল সে সব স্থানে কওমি মাদ্রাসা থেকে সমাপনকারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির ন্যায়ানুগ কোনো সুযোগ ছিলো না ৷ কিন্তু মরহুম রাষ্ট্রপতি (জিয়াউল হক সাহেব) ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাষ্ট্রীয়ভাবে কওমি সনদকে মাস্টার্সের সমমান প্রদান করে শিক্ষাঙ্গন ও অন্যান্য পদসমূহে উলামায়ে কেরাম থেকে উপকৃত হওয়ার দুয়ার খুলে দিয়েছেন ৷
সম্প্রতি অনেকের মুখেই একটি কথা শুনা যাচ্ছে যে, “রাষ্ট্রপতি জিয়াউল হকের শাসনামলে উলামায়ে কেরামের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে ”৷ আমি মনে করি এমন উক্তি সঠিক নয়;কেননা বাস্তবিক অর্থে যাঁরা আলেম হয়েছেন, তারা কোনো ব্যক্তি কর্তৃক তাঁদের সম্মান প্রদর্শনের মুখাপেক্ষি নন। আল্লাহ তা’আলা নিজে যে ইলমে দ্বীনের যে সম্মান-মর্যাদা প্রদান করেছেন তা অন্য কারো সম্মান ও স্বীকৃতি প্রদানের মুখাপেক্ষী নয় ।
আল্লাহ তা’আলা যাকে দ্বীনের প্রকৃতজ্ঞান দান করেছেন, তিনি কখনো জাগতিক মূল্যায়নের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেন না এবং সরকারি স্বীকৃতিতে বাস্তবিকপক্ষে তার সম্মান বৃদ্ধি হয়েছে বলে তিনি মনেও করেন না ৷
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো যে, যে সব সরকারি পদে উলামায়ে কেরামের বিচরণের প্রয়োজন ছিল সে সব স্থানে উলামায়ে কেরামের উপস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় খেদমত আঞ্জামের পন্থা খোঁজা হচ্ছিল ৷ কিন্তু পূর্ববর্তী কোন শাসনামলে উলামায়ে কেরামের রাষ্ট্রীয় খেদমতের কোন সুযোগ ছিল না বরং এসব পথ রূদ্ধ করার সর্বাত্মক অপচেষ্টাও করা হয়েছে ৷ কিন্তু মরহুম রাষ্ট্রপতি (জিয়াউল হক সাহেব) ব্যক্তিগত ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট পদসমূহে রাষ্ট্রকে উলামায়ে কেরাম থেকে উপকৃত হওয়ার প্রশংসনীয় চেষ্টা করেছেন ৷
(পাকিস্তানের সাবেক বিচারপতি মুফতী তাকী উসমানী দা.বা. লিখিত নুকূশে রফতেগাঁ গ্রন্থের ৩৫০-৩৫১ নং পৃষ্ঠা থেকে পাকিস্তানের কওমী মাদরাসাসমূহের সরকারি স্বীকৃতি প্রসঙ্গে লেখাটির বঙ্গানুবাদ করেছেন তাওহীদুল ইসলাম ৷)